রূপচর্চায় লেবুর ব্যবহার

 **ত্বকের কালচেভাব কমানো, খুশকি দূর কিংবা দাঁত সাদা                 করতে লেবুর রস বেশ কার্যকর।

 

গরমকালে একগ্লাস লেবুর শরবত শরীরে দেয় প্রশান্তি। খাবারে লেবুর রস বাড়ায় স্বাদ। পাশাপাশি ভিটামিন সি’র সবচেয়ে ভালো উৎস হিসেবে লেবু যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কাজ করে সে কথা সবারই জানা। 

ভিটামিন সি ছাড়াও লেবুতে আছে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম। যা হাড়ের গঠনে অত্যন্ত জরুরি। আর যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের খাবারের তালিকার জন্য লেবু অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার।

শুধু স্বাস্থ্যগুণ নয় রূপচর্চার ক্ষেত্রেও লেবুর ব্যবহার অতুলনীয়। ত্বক টানটান করে ত্বকে উজ্জ্বলতা আনতে জুরি নেই লেবুর।

 *ব্রণের সমস্যা দূরঃ

 ব্রণের সমস্যা দূর করতে লেবুর জুরি নেই। সমস্যায় আক্রান্ত ত্বকের উপর এক টুকরা লেবু ঘষে নিলে তা ব্রণ শুকিয়ে যেতে সাহায্য করে। লেবুর ভিটামিন সি’তে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবাইয়াল এবং হিলিং প্রোপার্টিজ। যা ত্বক সুস্থ করতে সাহায্য করে। ত্বকে লেবুর রস লাগিয়ে পাঁচ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

- ত্বকে ব্রণের দাগের উপর লেবুর রস ব্যবহারে দাগ হালকা হয়। লেবুতে রয়েছে সিট্রিক অ্যাসিড যা ত্বক ব্লিচ করতে সাহায্য করে। তাই লেবুর রস ত্বকের অবাঞ্ছিত দাগ দূর হতে সাহায্য করে।

*অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকের জন্যঃ

 অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকের জন্যও লেবু উপকারী। ঘুমাতে যাওয়ার আগে তুলায় লেবুর রসে লাগিয়ে ত্বকে ঘষে নিতে হবে। সারা রাত লেবুর রস ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করতে সাহায্য করবে। সকালে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

* মুখে ব্যবহার:

 লেবু প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা ত্বক ভালো রাখতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই ভিটামিন ত্বকের ক্ষয় দূর করে এবং অকালে বয়সের ছাপ পড়া থেকে রক্ষা করে।

লেবু অ্যাস্ট্রিনজান্ট সমৃদ্ধ সিট্রাস ফল যা ত্বক মসৃণ রাখে, গরম ও ঘামের কারণে হওয়া তৈলাক্তভাব কমায়। এর অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান ত্বকের মৃতকোষ এবং ব্রেক আউট দূর করে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে প্যাকের সঙ্গে লেবু মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

ডাবের পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটা তৈলাক্ত ত্বকে খুব ভালো কাজ করে।

যাদের ত্বক শুষ্ক তারা ডাবের পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন, ত্বক মসৃণ হবে।

* কালচেভাব দূর করতে:

 কালচে কনুই ও হাঁটুর সমস্যা অনেকেরই আছে। এই দাগ হালকা করতে এসব জায়গায় লেবু ও লবণের মিশ্রণ ঘষুণ। ভিটামিন এ এবং সিট্রিক অ্যাসিড এক্ষেত্রে চমৎকার কাজ করে। 

ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে দুতিনবার লেবু ও লবণের মিশ্রণ আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করুন। 
ঠোঁটে ব্যবহার:
গরমকালেও ঠোঁট হতে পারে শুষ্ক ও মলিন। এই সমস্যা দূর করা যায় লেবুর সাহায্যে।

লেবুর রস ও বাদামি চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে ঠোঁট এক্সফলিয়েট করে নিন। লেবুর অ্যাসিডিক উপাদান রাসায়নিক এক্সফলিয়েটরের চেয়ে ভালো। চিনির দানাদার অংশ সরাসরি এক্সফলিয়েটরের কাজ করে। লেবু ও চিনির সংমিশ্রণ ত্বকের মৃত কোষ দূর করতেও কার্যকর।

লেবু ও চিনির মিশ্রণ আলতোভাবে ঠোঁটে মালিশ করে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

 দাঁতে ব্যবহার:

 ঝলমলে হাসির জন্য চাই ঝকঝকে সাদা দাঁত। দাঁত সাদা করতে লেবুর তৈরি ‘হোয়াইটেনিং প্যাক’ বেশ কার্যকর। বেইকিং সোডা ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং তা দাঁতের ওপরে পাতলা করে প্রলেপ দিয়ে রাখুন। এরপর টুথব্রাশের সাহায্যে দাঁত মেজে নিন এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন। দাঁত ঝকঝক করবে।

আর 

 

ভঙ্গুর নখের জন্যও দারুণ উপকারী লেবু। অলিভ অয়েলের সঙ্গে খানিকটা লেবুর রস মিশিয়ে নখে মালিশ করতে হবে। এই মিশ্রণ নখ মজবুত করে এবং নখ হলদে হওয়া থেকে বাঁচায়।

- অলিভ অয়েল, লেবুর রস, মধু এবং নারিকেল তেলের মিশ্রণ মাথার ত্বকে মালিশ করলে খুশকি দূর হয় এবং রুক্ষ চুলের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

- টক দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস, ত্বক পরিষ্কারে দারুণ প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে। চাইলে এই মিশ্রণের সঙ্গে ল্যাভেন্ডার বা জেসমিন বা ক্যামোমাইন এসেনশিয়াল তেলও মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে।

- চুল হাইলাইট করতেও লেবু কার্যকর। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। কন্ডিশনারের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে চুলের যে অংশ হাইলাইট করতে চান সেখানে লাগাতে হবে। এরপর কিছুক্ষণ রোদে বসে অপেক্ষা করতে হবে। কয়েক মিনিট অপেক্ষার পর ধুয়ে ফেলতে হবে। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে এক দিন নিয়ম করে এই মিশ্রণ ব্যবহার করতে হবে।

 



 
 
 
 

Comments